বিয়ে করার আগে আমরা অনেক কিছুই চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেই। যার সাথে বিয়ে হচ্ছে, সে মানুষ হিসেবে কেমন, একসাথে সারাজীবন কাটানোর মত বনিবনা হয় কিনা ইত্যাদি অনেক কিছুই দেখতে হয়। তবে ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় দেখতে গিয়ে অনেক সময়েই আমরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার ভুলে যাই। তা হচ্ছে, বিবাহিত জীবনে কোন ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি ডেকে আনা হচ্ছে কি’না। এই স্বাস্থ্যঝুঁকি শুধুমাত্র স্বামী-স্ত্রীর ক্ষেত্রেই নয়, অনাগত সন্তানের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এ কারণে নিম্নোক্ত মেডিক্যাল টেস্টগুলো আপনি এবং আপনার পার্টনার উভয়েরই করানো উচিত।
এইচআইভি এবং এসটিডি
এইডস এবং অন্যান্য সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিসিজ, যেমন, সিফিলিস, গনোরিয়া, ওয়ার্টস ইত্যাদি পরীক্ষা করা অবশ্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিয়ের পরবর্তী সময়ে আপনি সেক্সুয়ালী একটিভ হবেন, এবং সে কারণেই এ ধরনের রোগের সম্ভাবনা একদম ভালোভাবে যাচাই করে নেয়া উচিত। এ সমস্ত রোগ খুবই সংক্রামক। শুধু তা’ই নয়, দম্পতির কারো এই রোগগুলো থেকে থাকলে তা সন্তানের মধ্যেও ছড়িয়ে যাওয়ার অনেক সম্ভাবনা থাকে। তাই আগে থেকেই টেস্ট করে নিন।
ফার্টিলিটি টেস্ট
বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে পরবর্তী প্রজন্ম রেখে যাওয়া। কিন্তু দম্পতির যে কোন একজন সন্তান জন্মদানে অক্ষম হলে তা কখনোই সম্ভব হবে না। এ কারণে স্বামী স্ত্রী দু’জনেরই বিয়ের আগে ফার্টিলিটি টেস্ট করে নেয়া উচিত। অনেক সময় বিয়ের পর সন্তান না হওয়ার পরবর্তীতে এই ফার্টিলিটি টেস্ট করতে গিয়ে দেখা যায় স্বামী-স্ত্রী এর কোন একজন সন্তান জন্মদানে অক্ষম। এমন পরিস্থিতিতে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়া বেশ স্বাভাবিক। তাই বিয়ের আগেই এ ব্যাপারে পরিষ্কার হয়ে নেয়া উচিত।
রক্ত পরীক্ষা
রক্তবাহিত রোগের কারনে কোন কোন ক্ষেত্রে জন্মের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই সন্তানের মৃত্যু হতে পারে। থ্যালাসেমিয়া, হিমোফিলিয়া ইত্যাদি রোগ রক্তের মাধ্যমে সন্তান জন্ম থেকেই ওই রোগের বাহক হয়ে যায়। আবার, একই ব্লাড গ্রুপের পজিটিভ এবং নেগেটিভ রক্তধারনকারী দু’জনের মধ্যে বিয়ে হলে দ্বিতীয় সন্তানের মধ্যে ব্লাড গ্রুপ ইনকমপ্যাটিবিলিটি তৈরী হয় এবং সেই সন্তানকে ভুগতে হয়। তাই সন্তানের ভবিষ্যত সুস্থ জীবনের জন্য হলেও রক্ত পরীক্ষা ছাড়া কোনভাবেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবেন না।
জিন টেস্ট
পিতা-মাতার বৈশিষ্ট্য জিনের মাধ্যমে সন্তানের মধ্যে প্রবাহিত হয়। এ কারণেই সন্তান সাধারনত দেখতে পিতা-মাতার মতই হয়ে থাকে। কিন্তু শুধু বাহ্যিক শারীরিক বৈশিষ্ট্যই নয়, আরো অনেক ধরনের বৈশিষ্ট্যই পিতা মাতা থেকে সন্তানের মধ্যে যেতে পারে। এবং এর মধ্যে জিনগত কারণে হওয়া অসুখও রয়েছে। সিস্টিক ফাইব্রোসিস, লাং ক্যান্সার, ব্রেস্ট ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার ইত্যাদি যদি পিতা-মাতার থেকে থাকে, তাহলে সন্তানও এসব রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাই বিয়ের আগে শুধু স্বামী-স্ত্রী’ই নয়, বরঞ্চ উভয়ের পরিবারেরই মেডিক্যাল হিস্ট্রি জেনে নেয়া দরকার।