বাংলাদেশী বিয়ে আয়োজন করা মানেই প্রচুর কাজের ঝক্কি-ঝামেলা। অনুষ্ঠানের আমন্ত্রিত অতিথিদের আপ্যায়নের জন্য প্রচুর বন্দোবস্ত করতে হয়। স্টেজ আর ভেন্যুর ডেকোরেশন, খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন, বিনোদনের ব্যবস্থা ইত্যাদি ছাড়াও আরো অনেক রকমের অনুসঙ্গ নিয়েই বিয়ের অতিথি আপ্যায়ন হয়ে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিভিন্ন ধরনের ওয়েডিং সার্ভিস ভাড়া করার মাধ্যমে এই চাহিদাগুলো পূরণ করা হয়ে থাকে।
তবে বাংলাদেশের ওয়েডিং সার্ভিস প্রোভাইডারদের নামে কিছুটা দুর্নাম রয়েছে, যে প্রায় সময়েই তারা প্রত্যাশা অনুযায়ী সার্ভিস দিতে পারেন না। তাই সার্ভিস প্রোভাইডার ভাড়া করার সময় বেশ সাবধানেই থাকা উচিত। বিভিন্ন ধরনের ওয়েডিং সার্ভিস প্রোভাইডার ভাড়া করতে গেলে যে সমস্ত বিষয় খেয়াল রাখা উচিত, তা নিয়েই আজকের পোস্ট।
১। কেটারিং সার্ভিস

খুব সম্ভবত বাংলাদেশের বিয়েতে বেশিরভাগ মানুষের কাছেই খাবারটা একটু বেশিই গুরুত্বপূর্ণ। বিয়েতে প্রচুর মেহমান খাওয়াতে হয়, তাই খাবারের মান এবং স্বাদও হওয়া চাই যথাযথ। খাবারের স্বাদ যদি অতিথিদের রসনা তৃপ্ত করতে না পারে, তাহলে আয়োজকের মনে কিছুটা খুঁতখুঁতে ভাব থেকেই যায়। তাই কেটারিং সার্ভিসকে হতে হয় সবথেকে নির্ভরযোগ্য।কেটারিং সার্ভিস ভাড়া করার সময় সবার আগে আপনার দেখে নেয়া উচিত তাদের খাবার তৈরী করার পরিবেশ কেমন। কিছু কেটারিং সার্ভিস তাদের নিজেদের কিচেন থেকে রান্না করে সময়মত খাবার নিয়ে হাজির হয়, আবার কেউ কেউ ভেন্যুতে এসেই রান্না-বান্না সম্পন্ন করে। উভয় ক্ষেত্রেই রান্নার পরিবেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, খাবারের স্বাদ যেমনই হোক, তা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অথবা উপায়ে রান্না করা হলে সেই খাবার খেয়ে অসুখে পড়ার সম্ভাবনা প্রচুর।
দ্বিতীয়ত, মেন্যুর বৈচিত্র দেখে কেটারিং সার্ভিস ভাড়া করা উচিত। আপনি নিশ্চয়ই চান না যে আপনার আয়োজন করা বিয়ের অনুষ্ঠান বাকি আট-দশটার মতই হোক। যেহেতু একটু নতুনত্ব আনতেই হবে, তাই সেভাবেই খাবারের মেন্যু ঠিক করুন।তৃতীয়ত, যে কেটারিং সার্ভিসকে আপনি ভাড়া করার কথা চিন্তা করছেন, তাদের রেপুটেশন কেমন সেটাও একটু খোঁজ নিন। অনেক সময়ই সস্তায় খাবারের ঝামেলা সেরে ফেলার জন্য অনেকেই বাজে রেপুটেশনের কেটারিং সার্ভিস ভাড়া করে, যাতে হিতে বিপরীত হয়। আপনার পরিচিত মানুষজনকে জিজ্ঞেস করলেই খোঁজ খবর পেয়ে যেতে পারেন। আর তা যদি না হয়, সোশাল মিডিয়া তো আছেই।
২। ডেকোরেটর

খাবার তো হলো, এবার একটু সাজসজ্জার দিকেও নজর দেয়া উচিত। কমিউনিটি সেন্টার, কনভেনশন হল, বড় রেস্টুরেন্ট কিংবা আপনার নিজের বাসা, যেখানেই বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হোক না কেন, ডেকরেশন হতে হবে দৃষ্টিনন্দন এবং আধুনিক। আপনার নিজের যদি ভেন্যু সাজানোর ব্যাপারে যথেষ্ট জ্ঞান থেকে থাকে, তাহলে তো হলোই। আর তা যদি না হয়, ডেকোরটর আপনাকে ভাড়া করতেই হবে।শুধু ভেন্যুর সাজসজ্জাই না, আরো অনেক দরকারে ডেকোরেটর ভাড়া করার দরকার হয়। যদি আপনার নিজের বাসায় একটা অনুষ্ঠান করতে চান, তাহলে অতিথিদের বসার ব্যবস্থা করতে হবে ডেকোরেটরের মাধ্যমেই। আর স্টেজ সাজানো থেকে শুরু করে অন্যান্য আনুসাঙ্গিক কাজ তো আছেই।
৩। ওয়েডিং ফটোগ্রাফি
বাংলাদেশী বিয়েতে ওয়েডিং ফটোগ্রাফি বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। বর-কনের পরিবার-সহ সবাই চান বিয়ের মুহূর্তগুলো ফ্রেমবন্দি করে রাখতে। তাই ওয়েডিং ফটোগ্রাফারদের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। ওয়েডিং ফটোগ্রাফির রীতিমত এজেন্সি আছে এখন। যা’ই হোক, আপনি কোন এজেন্সি অথবা প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার, যা’ই হায়ার করুন না কেন, কিছু জিনিস অবশ্যই মাথায় রাখবেন।প্রথমত, যেই ফটোগ্রাফার ছবি তুলবেন তিনি ওয়েডিং ফটোগ্রাফি স্পেশালিস্ট কি’না তা জেনে নিন। অনেক সময় স্বনামধন্য এজেন্সিগুলোও অনভিজ্ঞ ফটোগ্রাফার পাঠিয়ে দেয়। তাই ফটোগ্রাফারের সম্পর্কে খোঁজ নিন, তার পোর্টফোলিও দেখতে চান।

ওয়েডিং ফটোগ্রাফি
[su_button url=” https://biyebazaar.com/photography ” target=”blank” style=”3d” background=”#ea605f” size=”6″ center=”yes” icon=”icon: arrow-circle-o-right”]Hire Professional Wedding Photography[/su_button]
ফটোগ্রাফি প্যাকেজের মধ্যে কি কি পাচ্ছেন তা জেনে নিন। কতগুলো এডিট করা ছবি, ফ্রেমে বাঁধাই করা ছবি পাবেন তার সংখ্যা জানতে চান। তাছাড়া, ফটোগ্রাফি সেশনের দৈর্ঘ্য এবং অন্যান্য তথ্যও সংগ্রহ করুন। তারপর যাচাই করে দেখুন যে তা আপনার চাহিদা পূরণে যথেষ্ট কি’না।যদি সম্ভব হয়, তাহলে কি কি ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করা হবে তা’ও একটু দেখে নিন। যদি ফটোগ্রাফি সম্পর্কে আপনার হালকা জ্ঞান থাকে, তাহলে স্পেসিফিকেশন দেখেই বুঝবেন যে ইকুইপমেন্টের কোয়ালিটি কেমন।
ফটোগ্রাফার হায়ার করার পর যদি সম্ভব হয় তাহলে একটু বর-কনেকে সাথে নিয়ে ফটোগ্রাফারের সাথে ফটোসেশনের প্ল্যান নিয়ে বসুন। বিয়ের অনুষ্ঠানের সময় বেশ অল্প, কিন্তু বিস্তৃতি অনেক বেশি। তাই আগে-ভাগে সব কিছু প্ল্যান করে রাখা সবার জন্যই ভালো।